হ্যালো, আমি আপনার ক্যারিয়ার কোচ। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গার্মেন্টস রপ্তানিকারক দেশ – প্রতি বছর ৪৫ বিলিয়ন ডলার আয়, ৪৫ লাখ কর্মী নিয়োগ করে। আরএমজি (Ready Made Garments) সেক্টরে কাজ করতে চান? এখানে মার্চেন্ডাইজার, প্রোডাকশন ম্যানেজার, কোয়ালিটি কন্ট্রোলার থেকে ডিজাইনার – সবার জন্য সুযোগ। কিন্তু এটি শুধু চাকরি নয়, দক্ষতা ও ধৈর্যের খেলা। আজ সহজ বাংলায় ধাপে ধাপে বলছি, কীভাবে শুরু করবেন, কারা উপযুক্ত এবং চ্যালেঞ্জগুলো কী।
আরএমজি ক্যারিয়ার কেন আকর্ষণীয় এবং কী কী পদ আছে?
আরএমজি বাংলাদেশের অর্থনীতির ৮৪% রপ্তানি করে। ৬০০০+ ফ্যাক্টরি, ঢাকা-গাজীপুর-নারায়ণগঞ্জে কেন্দ্রীভূত। নতুনদের জন্য প্রবেশ-স্তর: প্রোডাকশন অ্যাসিস্ট্যান্ট (লাইন সুপারভাইজার), মার্চেন্ডাইজিং ইন্টার্ন, কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর। বেতন: ১৮-৩০ হাজার শুরুতে, ৩-৫ বছর পর ৫০-৮০ হাজার। ওভারটাইম, বোনাস (ইদ-পূজা) যোগ হলে বছরে ৫-৮ লাখ। ক্যারিয়ার পাথ: সুপারভাইজার → ম্যানেজার → জেনারেল ম্যানেজার → এক্সপোর্ট ডিরেক্টর। বড় কোম্পানি (সিঙ্গেলস, নিউটেক্স) আন্তর্জাতিক ট্রেনিং দেয়। bdjobs.com-এ “RMG Job” সার্চ করলে ২০০০+ পোস্ট পাবেন।
কারা আরএমজি ক্যারিয়ারের জন্য সবচেয়ে ভালো অপশন?
আরএমজি সবার জন্য নয়, কিন্তু কিছু লোকের জন্য সোনার খনি। সবচেয়ে উপযুক্ত: টেক্সটাইল/গার্মেন্টস ডিপ্লোমা/বিবিএ (টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট) ছাত্রছাত্রী, যারা ফ্যাক্টরিতে কাজ করতে প্রস্তুত এবং দ্রুত শেখে। ঢাকা-গাজীপুরের যুবক-যুবতী, বিশেষ করে টেকনিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড (পলিটেকনিক) ওয়ালা। নারীরা মার্চেন্ডাইজিং এবং কোয়ালিটি কন্ট্রোলে সফল হয় (৪০% কর্মী নারী)। যারা হ্যান্ডস-অন কাজ পছন্দ করে, ওভারটাইম করতে পারে এবং ইংরেজি (বায়ার কমিউনিকেশন) জানে – তারাই সেরা। অভিজ্ঞতা ছাড়াই শুরু করতে চাইলে BGMEA-এর ট্রেনিং সেন্টার থেকে ৩ মাসের কোর্স নিন। যারা ৯-৫ অফিস জব চায় তারা এড়িয়ে যাক।
চাকরি খোঁজা এবং প্রস্তুতির ধাপসমূহ
শুরু করুন ইন্টার্নশিপ দিয়ে – DBL, Youngone-এ ৩-৬ মাস। bdjobs.com, rmgtxtjobs.com-এ আবেদন। CV-তে স্কিল উল্লেখ: সেলাই মেশিন, ফ্যাব্রিক জ্ঞান, Excel। সিলেকশন: ওয়ারিটেন (গণিত, ইংরেজি, টেক্সটাইল GK), প্র্যাকটিক্যাল টেস্ট (স্যাম্পল চেক), ইন্টারভিউ। প্রশ্ন: “১০০০ পিস শার্ট ৭ দিনে কীভাবে ডেলিভারি দেবেন?” উত্তর: “লাইন লেআউট করে, মেশিন অ্যালোকেশন দিয়ে টার্গেট সেট করব।” ফ্যাক্টরি ভিজিট করে প্র্যাকটিস করুন। লোকেশন: গাজীপুর-সাভার (৯০% জব), শুটল বাস আছে।
জব সিকিউরিটির চ্যালেঞ্জ: বাস্তবতা যা জানা দরকার
আরএমজি জবের জব সিকিউরিটি অস্থির। অর্ডার-ভিত্তিক – H&M, Zara-এর অর্ডার শেষ হলে লেআউট (চাকরি কাটা) হয়। ২০২৪-এ মন্দা-রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর ২ লাখ চাকরি গেছে। মৌসুমী: ইউরোপের শীতকালে অর্ডার বাড়ে, গ্রীষ্মে কম। ছোট ফ্যাক্টরিতে ঝুঁকি বেশি, বড়গুলো (নিউটেক্স) স্থিতিশীল। লেবার আনরেস্ট, স্ট্রাইক, নিরাপত্তা ইস্যু (রানা প্লাজা) চাকরি হারানোর কারণ। প্রমোশন দ্রুত কিন্তু বেতন ব্যাংকের চেয়ে কম। সমাধান: মাল্টি-স্কিল (মার্চেন্ডাইজিং + প্রোডাকশন), BGMEA সার্টিফিকেট, নেটওয়ার্কিং। ৫ বছর অভিজ্ঞতা হলে সিকিউর।
দৈনন্দিন কাজ, ক্যারিয়ার গ্রোথ এবং স্কিল ডেভেলপমেন্ট
একদিনে: লাইন চেক, অর্ডার ফলো-আপ, কোয়ালিটি রিপোর্ট, বায়ার মিটিং। গ্রোথ: অ্যাসিস্ট্যান্ট → সুপারভাইজার → ম্যানেজার (১০ বছরে)। স্কিল: Gerber (প্যাটার্ন), Lectra (কাটিং), AQL (কোয়ালিটি), ISO ৯০০১। ফ্রি/লো-কস্ট: BGMEA ট্রেনিড, NIFT, SME ফাউন্ডেশন কোর্স। নারীদের জন্য হোস্টেল, মাদারহুড লিভ আছে।
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং সফলতার টিপস
অন্য চ্যালেঞ্জ: লং আওয়ার্স (১২ ঘণ্টা), ফ্যাক্টরি পরিবেশ (ধুলো, গরম), প্রেশার টার্গেট। সমাধান: হেলথ চেকআপ, টিমওয়ার্ক। সফলতা: ইংরেজি শিখুন (বায়ার কল), সফটওয়্যার দক্ষ হোন, লিডারশিপ দেখান। আরএমজি থেকে লিভিংওয়েজ, ফ্যাশন হাউসে যাওয়া সম্ভব। আপনার যাত্রা শুরু করুন – দেশের অর্থনীতি গড়তে আপনার দরকার!