ক্যারিয়ার শুরু করার আগে এই ৮টা জিনিস মনে রাখুন

ক্যারিয়ার শুরু করার আগে কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখলে আপনি অনেক এগিয়ে থাকবেন এবং ভুল এড়াতে পারবেন। অনেকে ক্যারিয়ার বলতে শুধু চাকরি ভাবেন, কিন্তু আসলে চাকরি আর ক্যারিয়ার এক নয়। ক্যারিয়ারের পথ অনেক রকম—যেমন নিজের ব্যবসা শুরু করা, ফ্রিল্যান্সিং করে স্বাধীনভাবে কাজ করা, কোনো বিষয়ে পরামর্শদানের সেবা দেওয়া বা অন্যান্য স্বাধীন পেশা। শিক্ষকালে এসব জানা না থাকলে পরে অনেক কষ্ট হয়। সঠিক পরিকল্পনা এবং এই বিষয়গুলো মেনে চললে আপনি অন্যদের থেকে অনেকখানি এগিয়ে থাকবেন এবং সফলতা দ্রুত পাবেন।​

প্রথম ধাপ হলো নিজেকে ভালোভাবে চিনতে শেখা। এর জন্য SWOT বিশ্লেষণ করুন, যার অর্থ শক্তি (Strength), দুর্বলতা (Weakness), সুযোগ (Opportunity) এবং হুমকি (Threat)। একটা কাগজে লিখে ফেলুন আপনার শক্তিশালী দিকগুলো কী—যেমন কোনো বিষয়ে দক্ষতা, ভালো কথা বলা বা দ্রুত শেখার ক্ষমতা। তারপর সেই শক্তির সাথে মিলে কোন কোন সুযোগ আছে তা খুঁজুন, যেমন TVET সেক্টরে চাকরি বা ফ্রিল্যান্সিং। আবার আপনার দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করুন, যেমন ইংরেজি দুর্বল বা নেটওয়ার্কিং কম, এবং সেগুলো থেকে কী ধরনের হুমকি আসতে পারে তা ভাবুন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে ক্যারিয়ারের সম্ভাবনা এবং ঝুঁকি স্পষ্ট হয়ে যাবে, এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে।

দ্বিতীয়ত, যে কাজে আপনার ভালো লাগে এবং দক্ষতা আছে সেটাই বেছে নিন। নিজের সম্ভাবনা এবং সুযোগ পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিন—চাকরি করবেন নাকি স্বাধীন পেশায় যাবেন। পরিবারের ইচ্ছা বা কাউকে অনুসরণ করে নয়, নিজের পছন্দ অনুযায়ী পেশা নির্বাচন করুন। নিজেকে সম্মান করুন এবং নিজের যোগ্যতার উপর আস্থা রাখুন। কারণ যা আপনি নিজেকে পাওয়ার উপযুক্ত মনে করবেন, তাই-ই আপনি পাবেন। এতে ক্যারিয়ার দীর্ঘমেয়াদী সফলতা দেবে।​

তৃতীয়ত, নিয়মিত পড়াশোনা এবং জ্ঞান অর্জনের অভ্যাস গড়ে তুলুন। শেখার জন্য প্রতিদিন পড়া খুবই কার্যকরী। পেশা-সংশ্লিষ্ট বইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ের বই পড়ুন, যাতে আপনার অন্তর্দৃষ্টি বিকশিত হয়। এতে কর্মজীবনে আপনি সবসময় এগিয়ে থাকবেন এবং নতুন আইডিয়া পাবেন।

চতুর্থত, ক্রমাগত দক্ষতা বাড়াতে সচেষ্ট হোন। আপনার পেশায় কী কী দক্ষতা লাগে তা খুঁজে বের করুন এবং সেগুলো শিখুন। সমসাময়িক প্রকাশনা পড়ুন, ট্রেনিং নিন, প্রফেশনাল কোর্স করুন এবং সার্টিফিকেশন নিন। শুধু সাধারণ কর্মী নয়, ব্যবস্থাপকীয় গুণাবলী অর্জন করলে উত্তরোত্তর সামনে এগিয়ে যাবেন। এতে প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে টিকে থাকা এবং সম্মান পাওয়া সহজ হবে।​

পঞ্চমত, চাকরির ক্ষেত্রে অর্থ এবং ভালোবাসা দুটোর ভারসাম্য রাখুন। যেখানে বেতন বেশি সেখানে চেষ্টা করুন, কারণ চাকরি মানে শ্রম বিক্রি। কিন্তু যদি কাজটি আপনার ভালোবাসা এবং জীবনের লক্ষ্যের সাথে মিলে যায়, তাহলে অর্থের দিকে না তাকিয়ে সর্বোচ্চ দিন—অর্থ তখন স্বাভাবিকভাবে আসবে।

ষষ্ঠত, সম্ভব হলে সেই কাজ বেছে নিন যা আপনি ভালোবাসেন। ভালোবাসার কাজে বিরক্তি আসে না, কাজ মনে হয় না—নেশা পেশা হলে এগোনো সহজ। সবসময় মনে রাখুন কেন আপনি কাজ করছেন, এবং সেই কেন-এর উত্তর যদি অর্থপূর্ণ হয় তাহলে কাজ আনন্দের উৎস হবে।​

সপ্তমত, আপনার মেধাকে সেবায় রূপান্তর করুন। সফলতার প্রকৃত ফল হলো সেবা, অর্থ-সম্মান তা বাইপ্রোডাক্ট। মেধা চিহ্নিত করে বিকশিত করুন এবং সৃষ্টির সেবায় ব্যয় করুন—তাহলে সামান্য কাজও আপনাকে অসামান্য করে তুলবে এবং আপনার নাম শীর্ষে আসবে।

অষ্টমত, নেটওয়ার্কিং বাড়ান। শক্তিশালী পেশাদার নেটওয়ার্ক গড়ুন—বিভিন্ন শিল্প ইভেন্টে যোগ দিন, প্ল্যাটফর্মে সহকর্মীদের সাথে সংযোগ করুন। এতে নতুন সুযোগ, মূল্যবান পরামর্শ এবং অন্তর্দৃষ্টি পাবেন যা ক্যারিয়ারকে ত্বরান্বিত করবে। এই সব অনুসরণ করলে ক্যারিয়ার সফল এবং সন্তোষজনক হবে

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *